সোমবার, ৩ জুলাই, ২০১৭

কুরআন থেকে দূরে পলায়ন

লিখেছেনঃ   শায়েখ আবদুল আজিজ ইবনে বায  | বাংলা অনুবাদঃ  জহিরুল কাইয়ুম
প্রশ্নঃ প্রিয় শেইখ, যারা এক মাস অথবা এমনকি অনেক অনেক মাস যাবত কুরআন পাঠ/তেলাওয়াত করে না এবং এমন আচরণের জন্য কোন অজুহাতও নেই তাদের জন্য আপনার উপদেশ কি যাই হোকআপনি দেখে থাকবেন তাদের কেউ কেউ এমন সব ম্যাগাজিন পড়ে এবংগভীরভাবে অনুসরণ করে যেগুলো তাদের জন্য কোন সুফল বয়ে আনে না।  

উত্তরঃ প্রতিটি বিশ্বাসী পুরুষ ও নারীর উচিত যথাযথভাবে গভীর মনোযোগ ও উপলব্ধি দিয়ে মহাগ্রন্থ আল কুরআন তেলাওয়াত করা। এটি কোরআনের কোন এক কপি নিয়ে অথবা মুখস্ত আয়াত দিয়ে করা যেতে পারে। মহান আল্লাহ্‌ তায়ালা বলেনঃ
 “ এ এক কল্যাণময় কিতাব, এটা আমি তোমার উপর অবতীর্ণ করেছিযাতে মানুষ এর আয়াত সমূহ অনুধাবন করে এবং বোধশক্তি সম্পন্ন ব্যক্তিরা উপদেশ গ্রহন করে।[সূরা সোয়াদ ৩৮:২৯] 
এবং
“যারা আল্লাহ্‌র কিতাব পাঠ করে, নামাজ কায়েম করে, আমি তাদেরকে যে রিযিক দিয়েছি তা থেকে গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করে তারাই আশা করতে পারে তাদের এমন ব্যবসায়ের যার ক্ষয় নেই। এ জন্য যে আল্লাহ্‌ তাদের কর্মের পূর্ণ প্রতিফল দিবেন এবং নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে আরও বেশি দিবেন। তিনি তো ক্ষমাশীল ও গুণগ্রাহী।” [ সূরা ফাতির ৩৫:২৯-৩০]

উপরে উল্লেখিত কুরআন অধ্যয়ন বলতে তেলাওয়াত এবং আমল করা উভয়টিই বুঝানো হয়েছে। তেলাওয়াত হতে হবে গভীর ধ্যান ও বুঝার চেষ্টার মধ্য দিয়ে। কুরআন মানা এবং প্রাত্যহিক জীবনে আমল করা আল্লাহ্‌র প্রতি আন্তরিকতার একটি উপায়।কুরআন তেলাওয়াতকারীর জন্য  বিশেষ পুরস্কারও রয়েছে । হজরত মুহাম্মদ (সঃ) বলেনঃ
“কুরআনতেলাওয়াত করো। কারন কেয়ামতের দিনে তেলাওয়াত কারীর জন্য এটি সুপারিশ করবে/ মধ্যস্থতা করবে।” (সহিহ মুসলিম ৮০৪) 
হজরত মুহাম্মদ (সঃ) আরো বলেনঃ “তোমাদের মধ্যে সেই উত্তম যে কুরআন শিখে এবং শিক্ষা দেয়।” (সহিহ বুখারি ৯/৬৬)
আব্দুল্লাহ ইবনে মাসুদ(রা)এর অন্য একটি বর্ণনায়ঃ
“যে কোরআনের একটি হরফ তেলাওয়াত করবে সে একটি নেকী এবং এরকম আরো দশটি নেকী পাবে। আমি বলছিনা যে আলিফ লাম মীম একটি হরফ বরং আলিফ একটি হরফ, লাম একটি হরফ এবং মীম একটি হরফ”।(সহিহ তিরমিজি ২৯১২)
হজরত মুহাম্মদ (সঃ) আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে আল আস-কে বলেনঃ
“মাসে একবার কুরআন খতম কর। সে বললঃ আমি এর চেয়ে বেশি করতে পারি । তখন রাসুল (সঃ) বলেনঃ “সপ্তাহে একবার খতম কর।” [ সহিহ বুখারি (নং ৫০৫৪)]
সাহাবাগন সপ্তাহে একবার পুরো কুরআন খতম করতেন ।

তাই আমি সকল কুরআন তেলাওয়াতকারীকে গভীর মনোযোগ ও বুঝার চেষ্টার মাধ্যমে আল্লাহ্‌ তায়ালার প্রতি আন্তরিকতাসহ কুরআন শিক্ষা এবং কুরআন থেকে উপকার পাওয়ার উদ্দেশ্যে  আরো বেশি পরিমানে তেলাওয়াত করতে বলব। মাসে একবার অন্তত পুরো কুরআন খতম দেয়ার চেষ্টা করা উচিত। কেউ যদি কোন সমস্যা ছাড়া বেশি করতে পারে তাহলে আরো কম সময়ে খতম দেয়ার চেষ্টা করতে হবে। ভাল হয় যদি তিন দিনের কম সময়ে শেষ না করে যেহেতু হজরত মুহাম্মদ (সঃ)আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে আল আস-এর নিকট এ সময়টাকে সর্বনিন্ম বলেছেন। কারন তিনদিনের কম সময়ে শেষ করতে চাইলে একজন মানুষকে তাড়াহুড়া করতে হয় এবং সে কোরআনের বানী নিয়ে চিন্তা ভাবনা করতে পারেনা এবং মনোযোগ দিতে পারে না ।[ ফাতওয়া আল মারাহ (নং ২৯৪)]

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Abdul Kadir

Assalamu Alaikum

“ইসলামে সালাতের গুরুত্ব এতই সুমহান যে বসে থেকে সালাতের জন্য অপেক্ষা করাও একটি ইবাদাত!” — শাইখ সালিহ আল ফাওজান [ফাদাইল আস সলাহ, পৃ ১৩]